আমার ধর্ষণের গল্প!



স্বপ্নডাঙ্গা গ্রামে ভোর হল,
ভোর এল গায়ের এক প্রান্তের বিস্তীর্ন পাট-খেতে-
নিস্তব্ধ-নীথর,
পাখির কূজন এ জায়গাটিতে এখনও শোনা যাচ্ছে না,
শুধু,দূরের বাড়িটিতে একটি মোরগ
যেন জানান দিচ্ছে-'গরীবের প্রেম শুধু রাতের বিছানায়,
আর সারাটা দিন শুধুই কাজের-শুধুই সৃষ্টিশীলতার-সবুজের;
ওখানে সূর্যোদয়ের আগেই নারীরা ঘরকান্নায় মেতেছে,
দুধের শিশুরা গোয়াল-ঘরের বাছুরের সাথে মিলিয়ে স্বারগাম করছে,
কিশোরেরা গত সন্ধ্যায় মা কর্তৃক তুলে রাখা-
বানরের অদৃশ্য লেজ পশ্চাৎদেশে লাগাচ্ছে,
পুরুষেরা মনে-মনে দিনের কর্মপরিকল্পনা সাজাচ্ছে;
এ যেন চিরদিনের পরিচিত কোন গায়ের দিনের শুরু,
কিন্তু এখানে...
এই পাট-খেতের সংকীর্ণ ফাঁকা জায়গাটিতে,পড়ে আছে
একটি বোরকা, ঢেকে রেখেছে একটি নগ্ন শরীর,
মেয়েটি পাশের গায়ের,
গত রাতে, তিনটি ধর্মকুক্কুর ওকে ধর্মান্তরিত করে
ফেলে গেছে এই নির্জনে,
-গায়ের মসজিদের ইমামের ছেলে নিজামী,
মাদ্রাসার নব্য হাফেজ দেলোয়ার,আর
রাজাকার গোলাম আযমের পায়খানার দারোয়ান আমিনী,
রাতের সে পাশবিকতা ৫২-এর মত ছিলো না,
৭১-এর মত ছিল না,
৯১-এর মত ছিল না,
কারন, পশুরাও বিবর্তনে বিশ্বাসী-
পাশবিকতার বিবর্তন,আর
বিবর্তন নোংরামীর-বর্বরতার,
শুধু ধর্মীয়-অন্ধতার বিবর্তনই ওরা চায় না।

মেয়েটি লাল-পেড়ে শাড়ি পরে ছিল,
সমবয়সি ছেলেদের বুকের মাপে তৈরি ছিল ব্লাউজটি-
যেন শুধুই বউ-সাজার ছেলে-খেলার বহিঃপ্রকাশ,
ওর বয়স মাত্র এগারো-
তবু কুকুরেরা থামে নি,
তিন জোড়া হাত ছিড়ে নিয়েছে সে শাড়ি,
ওর বুকে মাংসের সন্ধান না পেয়ে-
কামোড়ে-কামোড়ে সেখানে এনে দিয়েছে যৌবন,
আর...
তারপর তিনটি কামুক যন্ত্রের ধর্ম উদ্ধারের পর,
ওরা 'বিসমিল্লাহ' বলে- সে শরীরে
পরিয়ে দিয়েছে পুন্যময় বোরকা!

দু'দিন পর নাতনীর ছেড়া শাড়িটি হাতে নিয়ে-
পাগলিনীর প্রায় কাঁদলেন দিদিমা,
গত বৈশাখে,পুরানো পানের কৌটায় জমানো-
আড়াই'শ টাকায় কিনে দেয়া সে শাড়িটি-
অবশেষে ভাঁজ করে রাখলেন জোড়াতালি দেয়া থলেতে,
কেউ কি জানে?
পুতুলের শাড়িটি-ই বাংলার ধর্ষিতা সংস্কৃতি!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন